ব্যবস্থাপনা কাকে বলে এবং ব্যবস্থাপনা বলতে কি বোঝায়?

আজকের আর্টিকেলে ব্যবস্থাপনা কাকে বলে এবং ব্যবস্থাপনা বলতে কি বোঝায়? এই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

ব্যবস্থাপনা

ব্যবস্থাপনা কাকে বলে?

ব্যবস্থাপনা কাকে বলে -ব্যবস্থাপনা বলতে সাধারণত সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রমের পরিকল্পনা, সংগঠন, পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ করার প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এটি উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য মানুষের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে এবং সংস্থার সম্পদ (যেমন মানব সম্পদ, অর্থ, উপকরণ, ইত্যাদি) সঠিকভাবে ব্যবহার করে।

বিভিন্ন মনীষিগণের সজ্ঞা

নিচে বিভিন্ন মনীষীদের ব্যবস্থাপনার সংজ্ঞা / ব্যবস্থাপনা কাকে বলে তা তুলে ধরা হলো:

  1. পিটার ড্রকার: “ব্যবস্থাপনা হলো একটি শিল্প যা লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য পরিকল্পনা, সংগঠন, পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণের প্রক্রিয়া।”
  2. ফ্রেডেরিক টেলর: “ব্যবস্থাপনা হলো কাজের কার্যকারিতা বৃদ্ধি এবং উৎপাদনশীলতা উন্নত করার জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ।”
  3. হেনরি ফয়ল: “ব্যবস্থাপনা হলো একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ কার্যক্রম যা লক্ষ্য অর্জনে মানব সম্পদ ও অন্যান্য সম্পদের সমন্বয় সাধন করে।”
  4. মিনজবার্গ: “ব্যবস্থাপনা হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া, যেখানে ব্যবসার বিভিন্ন কার্যক্রমের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা হয়।”
  5. ম্যাকগ্রেগর: “ব্যবস্থাপনা হলো একটি কার্যক্রম যা সংগঠন এবং তার সদস্যদের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে।”
  6. হربার্ট সাইমন: “ব্যবস্থাপনা হলো সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া যা তথ্য ও উত্সের ব্যবহার করে সমস্যা সমাধান করে।”

এই মনীষীগণের দৃষ্টিকোণ থেকে বোঝা যায় যে ব্যবস্থাপনা কেবল একটি প্রক্রিয়া নয়, বরং এটি উদ্দেশ্য অর্জনের জন্য মানুষ এবং সম্পদের মধ্যে সমন্বয়ের একটি শিল্প।

ব্যবস্থাপনার মূল উপাদানগুলো

ব্যবস্থাপনার মূল উপাদানগুলো হলো: পরিকল্পনা, সংগঠন, নির্দেশনা, এবং নিয়ন্ত্রণ। প্রতিটি উপাদানের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে যা সংগঠনকে সফলভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে।

১. পরিকল্পনা (Planning)

পরিকল্পনা হলো ব্যবস্থাপনার প্রথম এবং গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এতে সংগঠনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয় এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন কৌশল এবং পদক্ষেপ পরিকল্পনা করা হয়। পরিকল্পনার মাধ্যমে বিভিন্ন পরিস্থিতির জন্য পূর্বনির্ধারিত নির্দেশনা তৈরি করা হয়, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে সহজ করে। এটি নিশ্চিত করে যে সংগঠন সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং তার উদ্দেশ্য পূরণের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

২. সংগঠন (Organizing)

সংগঠন হলো পরিকল্পনার ভিত্তিতে সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার এবং কার্যক্রমের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করার প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে বিভিন্ন কাজের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা হয়, যাতে মানুষ, উপকরণ এবং তথ্যের ব্যবহার সর্বোত্তম হয়। সংগঠনের কাঠামো তৈরি করা হয়, যেখানে দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারণ করা হয়। এটি একটি কার্যকর পরিবেশ সৃষ্টি করে যেখানে সকল সদস্যের কাজ করার সুযোগ এবং দায়িত্ব থাকে।

৩. নির্দেশনা (Leading/Directing)

নির্দেশনা হলো কর্মীদের মধ্যে প্রেরণা জোগানো এবং তাদের কাজের প্রতি উৎসাহী করে তোলা। এই প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থাপকরা নেতৃত্ব দেন, তাদের দলের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং কাজের জন্য স্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেন। এটি কর্মীদের মধ্যে একটি ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি করে, যা তাদের উত্সাহিত করে এবং সংগঠনের লক্ষ্যের প্রতি তাদের অঙ্গীকার বৃদ্ধি করে।

৪. নিয়ন্ত্রণ (Controlling)

নিয়ন্ত্রণ হলো কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ এবং ফলাফল অনুযায়ী প্রয়োজনীয় সমন্বয় করা। এটি নিশ্চিত করে যে কাজগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে এবং লক্ষ্যে পৌঁছানোর পথে রয়েছে। নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মের ফলাফল বিশ্লেষণ করা হয়, যাতে সমস্যা বা বিচ্যুতি চিহ্নিত করা যায় এবং সংশোধনমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা যায়।

এই চারটি উপাদান একত্রে কাজ করে একটি সংগঠনের কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে, যার ফলে প্রতিষ্ঠানটি তার উদ্দেশ্য অর্জনে সফল হয়।

ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য

ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য হলো একটি সংগঠন বা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করে নির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন করা। এটি মূলত সংগঠনের সামগ্রিক সাফল্য ও স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে সাহায্য করে। এতে ব্যবস্থাপনা কাকে বলে তা বুঝা যায়। ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্যগুলো সাধারণত নিম্নরূপ:

১. লক্ষ্য অর্জন

সংগঠনের মূল লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য পূরণের জন্য ব্যবস্থাপনা একটি সুসংগঠিত পরিকল্পনা ও কৌশল নির্ধারণ করে। ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সঠিক দিকনির্দেশনা প্রদান করা হয়, যাতে সকল কর্মী একত্রে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে কাজ করতে পারে।

২. কার্যকারিতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি

ব্যবস্থাপনার একটি প্রধান উদ্দেশ্য হলো সংস্থার বিভিন্ন সম্পদ (যেমন মানব সম্পদ, উপকরণ, আর্থিক সম্পদ) কার্যকরীভাবে ব্যবহার করে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা। সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কাজ দ্রুত ও কম খরচে সম্পন্ন করা যায়।

৩. মানবসম্পদ উন্নয়ন

মানুষ একটি প্রতিষ্ঠানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কর্মীদের দক্ষতা ও যোগ্যতা উন্নত করার জন্য প্রশিক্ষণ, প্রণোদনা এবং উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হয়। এতে কর্মীরা তাদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারেন এবং প্রতিষ্ঠানও উপকৃত হয়।

৪. সমস্যার সমাধান এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ

ব্যবস্থাপনা সমস্যার দ্রুত এবং কার্যকর সমাধানের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে সহজ করে। এতে করে সংকটময় পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান সঠিক পথে অগ্রসর হতে পারে এবং ঝুঁকির মাত্রা কমিয়ে আনা যায়।

৫. সংগঠন ও সমন্বয়

সংগঠনের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয় সাধন করা এবং কাজের মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখা ব্যবস্থাপনার আরেকটি উদ্দেশ্য। এটি নিশ্চিত করে যে বিভিন্ন কার্যক্রম সমন্বিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে।

৬. সংগঠনের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা

ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানকে এমনভাবে পরিচালনা করা হয়, যাতে তা দীর্ঘমেয়াদে টিকে থাকতে পারে। এর মাধ্যমে ব্যবসার স্থায়িত্ব, বৃদ্ধি, এবং উন্নতির পথ সুগম হয়।

এই উদ্দেশ্যগুলো ব্যবস্থাপনাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া হিসেবে গড়ে তোলে, যা প্রতিষ্ঠানকে স্থায়িত্বের সাথে উন্নতির দিকে নিয়ে যায়।

ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্য

ব্যবস্থাপনার বৈশিষ্ট্যগুলো হলো এমন কিছু গুণাবলী, যা এই প্রক্রিয়াটিকে অন্যান্য কার্যক্রম থেকে আলাদা করে এবং এর গুরুত্ব ও প্রভাবকে বোঝাতে সাহায্য করে। নিচে ব্যবস্থাপনার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলো উল্লেখ করা হলো:

১. লক্ষ্যভিত্তিক প্রক্রিয়া

ব্যবস্থাপনা সর্বদা নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য পরিচালিত হয়। এটি প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য পরিকল্পনা, সংগঠন, পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের সমন্বয় ঘটায়।

২. সার্বজনীনতা

ব্যবস্থাপনা একটি সার্বজনীন প্রক্রিয়া, যা বিশ্বের যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনে প্রযোজ্য। এটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, সরকারি সংস্থা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা অন্য যে কোন সংগঠনে কার্যকরভাবে ব্যবহৃত হতে পারে।

৩. দলগত কার্যক্রম

ব্যবস্থাপনা একটি দলগত কার্যক্রম, যা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কর্মীর মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। এটি কর্মীদের মধ্যে সহযোগিতা এবং সমন্বয় বাড়াতে সাহায্য করে, যা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যের দিকে তাদেরকে পরিচালিত করে।

৪. বহুমুখিতা

ব্যবস্থাপনা বিভিন্ন কর্মকাণ্ড এবং সম্পদের উপর ভিত্তি করে কাজ করে। এতে পরিকল্পনা, সংগঠন, নির্দেশনা, এবং নিয়ন্ত্রণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত থাকে। এ কারণে, ব্যবস্থাপনা একটি বহুমুখী প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন অবস্থায় বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারে।

৫. গতিশীল প্রক্রিয়া

পরিবর্তনশীল পরিবেশে ব্যবস্থাপনা একটি গতিশীল প্রক্রিয়া, যা সময় এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। এটি পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে এবং নতুন চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হতে পারে।

৬. অবিচ্ছিন্ন কার্যক্রম

ব্যবস্থাপনা একটি অবিচ্ছিন্ন প্রক্রিয়া, যা প্রতিষ্ঠানের জীবনকালজুড়ে চলতে থাকে। এটি একবারেই সম্পন্ন হয় না; বরং এটি ক্রমাগতভাবে চলতে থাকে, কারণ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পরিবর্তনের সাথে সাথে ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তাও পরিবর্তিত হয়।

৭. নিয়ন্ত্রণমুখী

ব্যবস্থাপনা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে কর্মীদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে এবং মূল্যায়ন করে। এটি নিশ্চিত করে যে কাজগুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন হচ্ছে এবং যদি কোনো বিচ্যুতি ঘটে, তবে তা দ্রুত সমাধান করা হয়।

৮. সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভিত্তি

ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া পরিচালিত হয়। এটি তথ্য সংগ্রহ করে এবং তার ভিত্তিতে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ফলে এটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমকে সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে।

এই বৈশিষ্ট্যগুলো ব্যবস্থাপনাকে একটি সুনির্দিষ্ট এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া হিসেবে গড়ে তোলে, যা একটি সংগঠনের সাফল্য নিশ্চিত করতে সহায়ক।

আরও পড়ুন: হিসাব বিজ্ঞান কাকে বলে? হিসাব বিজ্ঞানের কার্যবলী এবং প্রকারভেদ।

ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব

ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব অনেক কারণেই অপরিসীম, কারণ এটি একটি প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত এবং সমন্বিত করতে সাহায্য করে। নিচে ব্যবস্থাপনার প্রধান গুরুত্বগুলো তুলে ধরা হলো:

১. লক্ষ্য অর্জন

ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক। এটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করে এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য সঠিক পরিকল্পনা ও কৌশল প্রণয়ন করে। এর ফলে সংগঠন লক্ষ্য অর্জনে সুসংগঠিত এবং সঠিক পথে পরিচালিত হয়।

২. দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি

সঠিক ব্যবস্থাপনা সম্পদের কার্যকরী ব্যবহার নিশ্চিত করে এবং উৎপাদনশীলতা বাড়ায়। এটি কর্মীদের দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং প্রতিষ্ঠানকে খরচ কমিয়ে লাভ বৃদ্ধি করতে সহায়ক হয়।

৩. সময় ও সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার

ব্যবস্থাপনা সময় এবং সম্পদের অপচয় রোধ করতে সাহায্য করে। পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা সময়মতো কাজ সম্পন্ন করে এবং সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করে। এটি অপব্যয় কমিয়ে আরও কার্যকর ফলাফল অর্জন করতে সাহায্য করে।

৪. সংগঠনের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করা

ব্যবস্থাপনা একটি প্রতিষ্ঠানের স্থায়িত্ব এবং দীর্ঘমেয়াদী সফলতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পরিবর্তনশীল পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নিতে এবং ক্রমাগত উন্নতির জন্য পরিকল্পনা করে।

৫. নেতৃত্ব এবং প্রেরণা প্রদান

ব্যবস্থাপনা কর্মীদের মধ্যে নেতৃত্ব দেয় এবং তাদের প্রেরণা জোগায়। এটি কর্মীদের মনোবল বাড়ায় এবং তাদের উৎসাহিত করে, যাতে তারা কাজের প্রতি আগ্রহী থাকে এবং নিজেদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা প্রদান করে।

৬. ঝুঁকি মোকাবিলা এবং সমস্যা সমাধান

সঠিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকি মোকাবিলা এবং সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি সংকটময় পরিস্থিতিতে দ্রুত এবং সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে, যাতে প্রতিষ্ঠান সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করতে পারে।

৭. পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নেওয়া

ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তনশীল পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করে। এটি বাজারের চাহিদা, প্রযুক্তিগত পরিবর্তন, এবং প্রতিযোগিতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য নতুন পরিকল্পনা এবং কৌশল গ্রহণ করে।

৮. কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় এবং দলগত চেতনা সৃষ্টি

সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কর্মীদের মধ্যে সমন্বয় এবং সহযোগিতা সৃষ্টি হয়। এটি একটি ইতিবাচক কর্মপরিবেশ তৈরি করে, যেখানে সবাই একে অপরের সাথে মিলে কাজ করতে পারে এবং দলগত চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়।

সারসংক্ষেপে, ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা, স্থায়িত্ব, এবং সামগ্রিক সাফল্যের জন্য অপরিহার্য। এটি প্রতিষ্ঠানকে সঠিকভাবে পরিচালিত এবং কার্যকরীভাবে সমন্বিত করতে সহায়তা করে, যা প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য পূরণের পথকে সহজ করে তোলে।

উপসংহার

উপসংহারে বলা যায়, ব্যবস্থাপনা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অপরিহার্য প্রক্রিয়া, যা যেকোনো প্রতিষ্ঠানের সাফল্য, স্থায়িত্ব এবং উন্নয়নের জন্য আবশ্যক। এটি একটি সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে, কারণ এর মাধ্যমে কার্যক্রমকে সুনিয়ন্ত্রিত ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করা যায়। ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা, সংগঠন, নির্দেশনা, এবং নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মানবসম্পদ, অর্থ, উপকরণ ও অন্যান্য সম্পদের কার্যকরী ব্যবহার নিশ্চিত করে।এতে ব্যবস্থাপনা কাকে বলা তা বুঝা যায়

এর মাধ্যমে কর্মীদের মধ্যে সহযোগিতা, নেতৃত্ব এবং প্রেরণা বৃদ্ধি পায়, যা দলগত চেতনাকে শক্তিশালী করে এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সাফল্য অর্জনের পথ সুগম করে। সুতরাং, ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব অস্বীকার করা সম্ভব নয়, কারণ এটি প্রতিষ্ঠানের কার্যকারিতা, দক্ষতা, এবং সুষ্ঠু পরিচালনার মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। এ কারণেই ব্যবস্থাপনা যেকোনো প্রতিষ্ঠানের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচিত হয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top